চিয়াসিড খাওয়ার উপকারিতা
চিয়াসিড একটি ছোট কিন্তু অত্যন্ত পুষ্টিকর বীজ, বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এটি সাধারনত স্যালভিয়া হিস্পানিকা নামক উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। প্রাচীন মায়া ও আজটেক সভ্যতার মানুষেরা এটি খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করত।
চিয়াসিড একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর বীজ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসে পরিণত হতে পারে। এটি সঠিকভাবে সেবন করলে নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।
চিয়াসিডের পুষ্টিগুণ
চিয়াসিড ছোট হলেও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে। চিয়াসিডের ক্যালোরি ও ফ্যাট কন্টেন্টও কম, যা স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের জন্য উপযুক্ত।
ওজন কমাতে সহায়তা
চিয়াসিডে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং ক্ষুধা কমায়, যা ওজন কমাতে সহায়ক। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ ডাক্তার গন ওজন কমাতে চিয়াসিড খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
চিয়াসিড হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
ফাইবার সমৃদ্ধ চিয়াসিড হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়তা করে। চিয়াসিড কোলন পরিষ্কার রাখতে কাজ করে বলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এটি খাবার পরিপাক করতে সাহায্য করে এবং অবশিষ্টাংশ রেক্টাম দিয়ে বের করে দিতে সাহায্য করে। যাদের দীর্ঘকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য চিয়াসিড একটি আশীর্বাদ। চিয়াসিড পায়খানা নরম করে বের করে দেয় যার জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান হয়।
হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চিয়াসিড
পুষ্টিবিদরা জানান, চিয়া সিডে থাকা ওমেগা-৩ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে কাজ করে। যারা দীর্ঘদিন কোলেস্টেরল এর সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য নিয়মিত চিয়াসিড খেলে দারুন উপকার পেতে পারেন। চিয়াসিড এ প্রচুর প্রয়োজনীয় উপকারী উপাদান থাকায়, দিনে দুই চা চামচ চিয়া সিড শরীরে শক্তি দিবে এবং কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে কয়েকগুন।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
চিয়াসিডে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে দেহকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্য রোধে সহায়তা করে।
চিয়াসিড রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
চিয়াসিড রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। যারা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য চিয়াসিড একটা ভাল খাবার।
চিয়াসিডের ব্যবহারের পদ্ধতি
পানীয়তে ব্যবহার : চিয়াসিড পানিতে ভিজিয়ে রেখে পানীয়তে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এটি লেবুর শরবত, স্মুদি বা দইতে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
খাবারে মিশ্রণ : চিয়াসিড সালাদ, স্যুপ বা ওটমিলে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এটি খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি পুষ্টিগুণও বৃদ্ধি করে।
স্ন্যাক্সে ব্যবহার : চিয়াসিড দিয়ে নানা ধরনের স্ন্যাক্স তৈরি করা যায়, যেমন চিয়াসিড পুডিং বা চিয়াসিড বার।
চিয়াসিডের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত সেবনের ক্ষতি : অতিরিক্ত চিয়াসিড সেবন করলে হজমের সমস্যা হতে পারে। এটি গ্যাস, ফোলাভাব এবং ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
এলার্জি ও প্রতিক্রিয়া : কিছু মানুষের মধ্যে চিয়াসিড সেবনে এলার্জি হতে পারে। তাই প্রথমবার সেবনের আগে একটু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।